দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে অনেকটা ইতিবাচক প্রবণতা বিরাজ করছে দেশের পুঁজিবাজারে। যার কারণে খুলনার নির্জীব সিকিউরিটিজ হাউজগুলো বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতিতে প্রাণ ফিরে পেয়েছে। স্থানীয় সিকিউরিটিজ হাউজ কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৫ জানুয়ারি নির্বাচন অনুষ্ঠানের পর থেকে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক সহিংসতা কমে এসেছে। বন্ধ হয়েছে হরতাল-অবরোধ। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে বাজারে। এদিকে নতুন মন্ত্রিসভা গঠিত হয়েছে। এর ফলে পুঁজিবাজারে ইতিবাচক প্রবণতা অব্যাহত থাকবে বলেও মনে করছেন তারা।
এ প্রসঙ্গে সোমবার আইল্যান্ড সিকিউরিটিজ হাউজের খুলনা শাখা ব্যবস্থাপক তাপস কুমার সাহা বলেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতির ওপর পুঁজিবাজারের স্থিতিশীলতা অনেকটা নির্ভরশীল। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর রাজনৈতিক অস্থিরতা কমে আসায় তার প্রভাব পুঁজিবাজারেও দেখা যাচ্ছে। তিনি জানান, এতোদিন যেসব বিনিয়োগকারীরা বাজার বিমুখ ছিলেন বর্তমানে তারা কিছুটা আস্থা নিয়ে আবারো হাউজে ফিরে এসেছেন।
এসোসিয়েটেড ক্যাপিটাল সিকিউরিটিজ হাউজের খুলনা শাখা ব্যবস্থাপক ওয়েস আলী জামাল বলেন, নির্বাচন পরবর্তী নতুন সরকারের প্রথম দিক থেকেই সূচকের ঊর্ধ্বগতি অব্যাহত থাকায় এবং বেশিরভাগ কো¤পানির শেয়ার দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বাজার নিয়ে নতুন প্রত্যাশা ভর করেছে। যার কারণে যারা রাগে-ক্ষোভে হাউজে আসা ছেড়ে দিয়েছিলেন, তারা অবরোধের মধ্যে নতুন উদ্যামে স্বশরীরে হাউজে এসে লেনদেনমুখী হচ্ছেন।
তিনি আরো বলেন, সার্বিকভাবে বাজার কিছুটা ভালো হওয়ায় বিনিয়োগকারীরা আগের চেয়ে কিছুটা স্বস্তিতে আছেন। বিনিয়োগকারীরা বর্তমান বাজার ইতিবাচক হিসেবে দেখছেন। যে কারণে তারা হাউজে এসে লেনদেনে অংশ নিচ্ছেন।
বিশেষ অনুসন্ধানে জানা গেছে, খুলনায় ১৮টি সিকিউরিটিজ হাউজ রয়েছে। যেখানে প্রায় এক লাখ বিনিয়োগকারী রয়েছেন। যাদের মধ্যে রয়েছে পাট ও চিংড়ি মাছ ব্যবসায়ী, কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক, অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী, এনজিও কর্মী, এমনকি গৃহিণীরাও।
আস্থাহীনতা ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে এসব বিনিয়োগকারীরা রাগে-ক্ষোভে ও দেনার বোঝা মাথায় নিয়ে অনেকেই বাজার বিমুখ ছিলেন। কিন্তু দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর বাজার ভালো থাকায় বিনিয়োগাকারীরা কিছুটা আস্থা ফিরে পাওয়ায় নতুন করে বাজারে সক্রিয় হয়ে উঠছেন।
সিনহা সিকিউরিটিজ হাউজের অভিজ্ঞ বিনিয়োগকারী আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, নির্বাচন এবং নতুন সরকার গঠনের পর রাজনৈতিক অস্থিরতা কমে আসায় বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার জায়গা তৈরি হয়েছে। অনেক বিনিয়োগকারী নতুন করে বাজারে সক্রিয় হচ্ছেন। যে কারণে হাউজে নিয়োগকারীদের উপস্থিতি বাড়ছে বলে জানান তিনি।